'জীবন একগ্লাস চিনির শরবত নয়, বরং টক - ঝাল - মিষ্টি আচার। আর চিনির শরবতেও লেবুর একটু টক রস না দিলে কিন্তু ভালো লাগে না। জীবনে সুখের অনুভব যেমন থাকে, তেমনি থাকে দুখের উপস্থিতি।
জীবন যেন সুখের বাসর ; বেদনার বেলাভূমি। জীবন চলে জীবনের মতো।
জীবনের বাঁকে বাঁকে, সকাল সাঁঝে, সুখ - দুঃখ একে অপরকে ধাওয়া করে। পথের ধারে গাছের ছায়ায় হিমেল হাওয়ায় ঘুমিয়ে যাওয়া ক্লান্ত পথিকও ঘুমের মাঝে সুখের সাথে দুঃস্বপ্নও দেখে।
দুঃখ - সুখের দোলাচলে দুলছে এই মানব সভ্যতা, সেই আদিকাল থেকে। ভোরের স্নিগ্ধ আলো আর মিষ্টি রোদেও মৃত্যুর মিছিল থেমে থাকে না। আবার ঝড় আর বিরামহীন বৃষ্টি, এমনকি যুদ্ধের মধ্যেও নতুন মানব -শিশুর আগমন রুদ্ধ হয় না।
জীবনে দুঃখের বিরতিকেই আমরা সুখ বলি।
জীবন কখনো কৃষ্ণচূড়া - রক্তজবার লালে রঙিন,
কখনো নয়নতারা - হাসনাহেনার হাসিতে উচ্ছ্বল। আবার কখনো কানাবকের মতো ধূসর - মলিন, পানকৌড়ির কুচকুচে কালো পালকের মতো শোকাবহ, দুখী শিমফুলের মতো বেদনায় নীল। জীবনের এই সাদা - কালো- লাল - নীল সকল রঙ- ই চির সবুজ
মানবাত্মার সজীব ক্যানভাসে আঁকা।
ভালো - মন্দের দ্বন্দ্ব নিয়েই জীবন এগিয়ে যায় মৃত্যুর দিকে। জীবন গতি থেকে স্থিতি, শব্দ থেকে নীরবতায়,
সসীম থেকে অসীমে লীন হয়ে যায়।
সুখের রঙধনু জীবনের আকাশে ক্ষণকালই থাকে।
রঙধনু সত্য নয়, জীবনটাই সত্য। তাই, বিশ্বাসের আলোয় পথ চলুন, জীবনকে ভোগ নয় উপভোগ করুন মাত্রা বজায় রেখে, সকলের সাথে মিলেমিশে।'
('চয়ন প্রকাশন' থেকে প্রকাশিত আমার লেখা 'সুখ - সাফল্যের মায়াবী জগৎ' এর আলোকে।)