Featured Post সব ব্লগ

দুঃখহরণ বৃক্ষ

জিবনের উপলব্ধি  |  ব্লগ  |  আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া

২০২১-১২-২৫ ০৫:২৬

অমৃতসর পাজ্ঞাবের রাজধানী। যেখানে শিখদের পবিত্র ধর্মীয়স্থান "স্বর্ণমন্দির"। একটি দীঘির মাঝ খানে স্বর্ণ মন্দিরটি। ঐ দীঘির পাড়ে রয়েছে একটি গাছ।যাকে বলা হয় "দুঃখহরণবৃক্ষ"। শিখদের বিশ্বাস এই বৃক্ষটি মানুষের সব দুঃখকে নিজের করে নেয়। সে কারণে মানুষ এই গাছের নিচে বসে প্রার্থনা করে।

মানুষের সাথে বৃক্ষের সখ্যতা আদিকাল থেকেই। বৃক্ষহীন পৃথিবী অকল্পনীয়। বৃক্ষ আমাদের জীবনেকে সাজিয়ে রাখে নানা ভাবে। বৃক্ষেরও জীবন আছে। সে বেঁচে থাকতে মানুষের উপকার করে, মরে গেলে ও কাজে লাগে। তার ছাল - বাকল - দেহ - ফুল - ফল - লতা – পাতা সবই মানুষ ভোগ করে।

গাছের কাছে সব মানুষই সমান। সে কাউকে ফিরিয়ে দেয় না। এমনকি, পশু-পাখিকেও না। বৃক্ষ তার বীজে জীবন বিন্দু জমা করে রাখে। সে বীজ থেকে উদ্ভিদ – শিশুর জন্ম হয়। সে ধীরে ধীরে বড় হয়। মাথা তোলে। এক এক বয়সে, এক এক ঋতুতে তার এক এক রূপ। সব বয়সেই সে মানুষের পরম বন্ধু।

আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু পরম মমতায় গাছকে নিয়ে গবেষণা করেছেন। গাছের অব্যক্ত সুখ-দুঃখ-ব্যথা- বেদনা তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায় "আমরা যে রূপ আহার করি, গাছও সে রূপ আহার করে। আমাদের দাঁত আছে, আমরা কঠিন জিনিস খাইতে পারি। ছোট ছোট শিশুদের দাঁত নাই, তাহারা কেবল দুধ খায়।গাছেরও দাঁত নাই, সুতরাংতাহারা কেবল জলীয় দ্রব্য কিংবা বাতাস হইতে আহার গ্রহণ করিতে পারে।" গাছ শিশুদের মত সহজ-সরল। তার মুখে ভাষা নেই। কিন্তু, তার ভালোবাসা আর নানা দানে আমরা ধন্য হই। সুতরাং, আমরা শিশুদেরকে যেভাবে ভালোবাসি, সেভাবেই গাছকে কী দরদিমন নিয়ে পরম মমতায় ভালোবাসা উচিৎ নয়? আসুন, আমরা গাছ লাগাই, আমাদের পরম বন্ধু গাছকে ভালোবাসি।