এই রহস্যময় বিশ্ব কোন খেয়ালী সৃষ্টি নয়। এর সৃষ্টির একটি উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যটি হচ্ছে ক্রমবিকাশ ও ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে একে সুন্দর থেকে সুন্দরতর করা। আর এই বিশ্বনাট্যশালার কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে মানুষ। এই মানুষকে ঘিরেই সৃষ্টির এতো আয়োজন। এই মানুষকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু, মানুষ কে? মানুষের দেহটার নাম মানুষ নয়। আবার দেহের মধ্যের মনটাকেও এককভাবে মানুষ বলা যায় না। দেহ - মন -মননের সম্মিলিত রূপের নামই মানুষ। মানুষের মধ্যে স্রষ্টার দেওয়া যে বিবেক - চেতনা - রূহানীভাব তার বিকাশ ও প্রকাশের মাধ্যমেই মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। আর এই মানুষই তখন নিজকে চিনতে পারে, নিজের চারপাশের প্রকৃতি আর মানুষকে ভালোবেসে আপন করে নিতে পারে। অন্যের দুঃখ - বেদনা অনুভব করে তার পাশে মমতাভরা মন নিয়ে দাঁড়িয়ে তার নিজ মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলে।
একজন বিশ্বাসীর অন্তর থাকে জীবন্ত, বিবেক থাকে জাগ্রত, হৃদয় থাকে দয়া - মায়া - অনুকম্পায় ভরপুর। সে মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখে। মানুষ হিসেবেই ভালোবাসে। কারণ, সে জানে সকল মানুষকেই স্রষ্টা পরম মমতায় ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে বিবেক দিয়েছেন, কান্ডজ্ঞান দিয়েছেন। আবার পথহারা মানুষকে পথের দিশা দিতে দেশে দেশে যুগে যুগে নবী- রাসুল পাঠিয়েছেন।
মানুষ সৃষ্টির আদিতেে গেলে, সব মানুষ একই পিতা - মাতার সন্তান। সকলের দেহে একই পিতা - মাতার লাল রক্ত প্রবাহিত। আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে সকল মানুষ এক ও অভিন্ন। ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন দেশ, ভিন্ন গায়ের রঙ, ভিন্ন ধর্ম সত্ত্বেও আমরা সকলে 'মানুষ - অম্লান আলোকোজ্জ্বল মানুষ'। আমরা মানুষের কল্যাণেই কাজ করব। এটা সম্ভব হলে, মানবজাতির জন্য একটি মানবিক পৃথিবী গড়ে উঠবে। সেদিনের প্রত্যাশায়, সকলের জন্য শুভকামনা়।